জিএনএস কনস্ট্রাকশন ম্যানেজমেন্ট কিভাবে কাজ করে?
জিএনএস কনস্ট্রাকশন ম্যানেজমেন্ট – “জিওটেক স্ট্রাকচারস লিমিটেড” এর কনস্ট্রাকশন ডিভিশন এর অধীনে একটি যুগান্তকারী সার্ভিস।
আপনার জমিতে, আপনার টাকায় আমরা তৈরী করে দিব আপনার কাংখিত স্থাপনা, ভবন, ফ্যাক্টরি। এক্ষেত্রে মাটি পরীক্ষা, সারভে, ডিজাইন চেকিং, ম্যাটেরিয়াল ক্রয়, ভবন নির্মাণ, সুপারভিশন সব কাজ আমরা করে দিব বিশ্বস্থতার সাথে। আপনার সম্পদের সুব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অপচয় রোধ করে মানসম্পন্ন, টেকসই, ভূমিকম্পসহনীয় ভবন তৈরী করে দেয়ায় আমাদের কাজ।
আমাদের দায়ীত্বসমুহ
- ভাল মানের ম্যাটেরিয়াল কম দামে ক্রয়
- সঠিক মান এবং মাপে ম্যাটেরিয়াল বুঝে নেয়া
- আমাদের বিশেষজ্ঞ টিম দ্বারা ডিজাইন চেকিং
- যোগ্যতাসম্পন্ন লেবার কন্ট্রাকটর বাছাই
- সার্বক্ষণিক সাইট ইঞ্জিনিয়ার প্রদান (আমাদের খরচে)
- সিকিউরিটি গার্ডের নিয়োগ (আপনাদের খরচে)
- প্রজেক্টের ইস্টিমেট
- প্রজেক্টের হিসাব সংরক্ষণ
- লেবার, মিস্ত্রী, ফোরম্যান, সবাইকে কাজ বুঝিয়ে দেয়া, কাজ আদায় করে নেয়া
- সপ্তাহে একবার অথবা প্রয়োজনে একাধিকবার সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার দ্বারা সাইট ভিজিট করে কাজের তদারকী
- প্রয়োজনে আমাদের বিশেষজ্ঞ টিমের সাইট ভিজিট
- নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিল্ডিং হস্তান্তর
আমাদের সার্ভিস আপনি কেন নিবেন?
আমরা বাংলাদেশে কনস্ট্রাকশন সেক্টরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে নিচের প্রতিটা বিষয় মেনে নির্মাণ করি।
১। ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ দিয়ে ডিজাইন চেকিং
প্রতিটা বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন শুরুর আগে ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ দিয়ে চেক করানো হয় – যা সম্পুর্ণ ফ্রি। ফাউন্ডেশন ডিজাইন, স্ট্রাকচারাল ডিজাইন এবং কনস্ট্রাকশন – সবক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ দিয়ে চেক করানো হয়। বাংলাদেশ পলি মাটির দেশ। আমাদের দেশে বিগত একশ বছরের মধ্যে বড় ভূমিকম্প হয়নি। অর্থাৎ, একশ বছর পরপর যে বড় ভূমিকম্প হওয়ার কথা, সেটা আসন্ন। যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে একটা বড় ভূমিকম্প। এখানকার মাটিতে বিল্ডিং বানাতে অভিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার দিয়ে চেক না করলে রানা প্লাজার মত দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমাদের বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন বিকল্প অপশন এনালাইসিস করে সাশ্রয়ী কিন্তু টেকসই প্রযুক্তি বাছাই করেন যার কারনে তুলনামুলকভাবে সাশ্রয়ী মুল্যে নিরাপদ ভবন নির্মাণ সম্ভব হয়।
২। বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড ২০২০ (BNBC 2020)
বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড ২০২০ কে সংক্ষেপে BNBC 2020 নামে অভিহিত করা হয়। BNBC 2006 কে আপগ্রেড করে BNBC 2020 করা হয়েছে। এটা এখন গেজেটের মাধ্যমে আইনে পরিণত করা হয়েছে। বিল্ডিং কোডের উদ্দেশ্য হচ্ছে ইঞ্জিনিয়ার এবং জনগণকে নিরাপদ, টেকসই ও আরামদায়ক বাসস্থান নির্মাণে সহযোগিতা করা, গাইড করা, বাধ্য করা ইত্যাদি। আমাদের দেশের বেশীরভাগ ডেভেলপার কোম্পানি বিল্ডিং কোড মানেনা গুটিকয়েক ছাড়া। আমরা “বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড ২০২০” অনুযায়ী বিল্ডিং ডিজাইন এবং নির্মাণ করি যার মাধ্যমে আপনারা পাচ্ছেন নিরাপদ, ভূমিকম্পসহনীয়, টেকসই বিল্ডিং। ফলে, আপনার বিল্ডিং, ফ্যাক্টরি – সব ধরণের কমপ্লায়েন্স (RSC, NIRAPON, ACCORD, ALLIANCE, PRIMARK, LEVI’S) এ পাস করবে।
৩। সাইজমিক ডিটেইলিং (Seismic Detailing)
BNBC 2020 অনুযায়ী ভূমিকম্পসহনীয় বিল্ডিং নির্মাণে ৩ ধরনের ডিটেইলিং করার অপশন আছে। (ক) অর্ডিনারি (Ordinary) (খ) ইন্টারমিডিয়েট (Intermediate) এবং (গ) স্পেশাল সাইজমিক ডিটেইলিং (Special Seismic Detailing)। আপনার বিল্ডিং এর লোকেশন এবং মাটি পরীক্ষার রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে যে ডিটেইলিং প্রযোজ্য তা দিয়ে নির্মাণ সম্পন্ন করি। ফলে, ফেরোস্ক্যানিং সহ সব ধরণের টেস্টে আপনার ভবন পাশ করবে।
৪। ইটের খোয়ার ব্যাবহার পরিহার




৫। অটো ব্রিক অথবা কংক্রিট ব্লকের ব্যাবহার






৬। কংক্রিটের শক্তি
দুইটা বিষয় বিবেচনায় রেখে কংক্রিট বানানো উচিত। (ক) শক্তি (খ) স্থায়িত্ব । ইটের খোয়া ব্যাবহার করলে শক্তি এবং স্থায়িত্ব দুইটাই কম হয়। আবার পাথরের খোয়া ব্যাবহার করে সঠিক মাত্রায় সিমেন্ট ব্যবহার না করলে শক্তি ও স্থায়িত্ব দুইটাই কম হয়। যে কংক্রিটের শক্তি যত বেশী তার স্থায়িত্বও তত বেশী হয়। এসব বিবেচনায় রেখে আমরা (ক) সঠিক মাত্রায় ভাল মানের সিমেন্ট ব্যবহার করি (খ) পাথরের খোয়া ব্যবহার করি (গ) কংক্রিটের শক্তি ৪০০০ – ৫০০০ পি এস আই বজায় রাখি। আমরা প্রতিনিয়ত কংক্রিটের শক্তি পরীক্ষা করে এই বিষয়টি নিশ্চিত করি। বড় প্রজেক্ট হলে, আমরা সাইটে ল্যাব স্থাপন করে সব ধরণের ম্যাটেরিয়াল টেস্ট করে কোয়ালিটি কন্ট্রোল এবং এশিঊরেন্স করে থাকি।




৭। নরম তলার ট্রিট্মেন্ট
সাধারণত নীচ তলায় পার্কিং থাকে। উপরের তলাগুলোতে এপার্টমেন্ট করা হয়। ফলে, নীচের তলায় কোন দেয়াল থাকেনা এবং উপরের তলাগুলোতে দেয়াল থাকে। এই কারণে, নীচতলা দুর্বল হয় উপরের তলার সাপেক্ষে। এটাকে ইঞ্জিনিয়াররা “নরম তলা” (soft story) বলে থাকেন। এটার কারণে ভূমিকম্পের সময় নীচ তলায় পিলার ভেঙ্গে পুরো বিল্ডিং ধ্বসে পড়ে। এটার জন্য BNBC 2020 অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে বিল্ডিং ডিজাইন এবং কনস্ট্রাকশন করা হয়।


৮। ছাদে হিট এবং ড্যাম্প প্রুফিং
সাধারণত দেখা যায় ছাদের গরমের কারণে টপ ফ্লোরে এসি ছাড়া থাকা যায় না। আবার মাঝে মাঝে ড্যাম্প হয়, ছাদের নীচে রঙ থাকেনা, কালো হয়ে যায় – দেখতে বিশ্রী লাগে। আগের দিনে যেভাবে জলছাদ করা হতো তা ১০-১৫ বছরে নষ্ট হয়ে যায়। এখন অনেক আধুনিক ম্যাটেরিয়ালস আছে যা দিয়ে ছাদের উপর হিট এবং ড্যাম্প প্রুফিং করলে টপ ফ্লোরটা সবাই পছন্দ করবে।


৯। ট্রান্সপারেন্সি
প্রতিটা প্রজেক্টের আমরা হিসাব রাখি অনলাইনে। আপনি বিশ্বের যে কোন প্রান্ত থেকে যে কোন সময় দেখতে পারবেন আপনার প্রজেক্টের কোন খাতে কত ব্যয়। প্রতিটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কাস্টমারের অনুমতি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
১০। কোয়ালিটি কন্ট্রোল
অভিজ্ঞ রাজমিস্ত্রি, লেবার ও অন্যান্য টেকনিশিয়ানরা সার্বক্ষণিক একজন সাইট ইঞ্জিনিয়ারের তত্বাবধানে সকল কাজ সম্পন্ন করে। ১২ বছরের অভিজ্ঞ কনস্ট্রাকশন ম্যানেজার সাপ্তাহিক একবার সাইট ভিজিট করে। ২০ বছরের অভিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার মাসে একবার সাইট ভিজিট করেন।
কনস্ট্রাকশন কাজের কোয়ালিটির জন্য আমরা যে বিষয়গুলোর প্রতি বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে: কনস্ট্রাকশন সেফটি, লে-আউট চেক, শোর প্রটেকশন, মাটিকাটা, রড বাইন্ডিং, সাটারিং, কংক্রিট মিক্সিং, কিউরিং, কনস্ট্রাকশন কাজের সময় ইত্যাদি
খরচ কিভাবে কমে?
ভাল কোয়ালিটির নির্মাণ সম্পন্ন করার পরও আপনার খরচ কমবে ৫-১০%। একটা ১০ কাঠার প্লটে ১০ তলা ভবনের ক্ষেত্রে ৫০ লক্ষ থেকে ১ কোটি টাকা খরচ বেঁচে যাবে। কিভাবে?
মনে করি, প্রতি ফ্লোরে ২ টা ফ্ল্যাট। প্রতিটা ২,০০০ বর্গফুট করে মোট ১৮ টা ফ্ল্যাট। সুতরাং বিক্রয়যোগ্য ফ্লাট হল মোট ৩৬,০০০ বর্গফুট। মোট খরচ = ৩৬,০০০x২,২০০ = ৭,৯২,০০,০০০ টাকা = ৭.৯২ কোটি টাকা।
কিভাবে আমরা খরচ কমাতে পারি?
১। ফাউন্ডেশনঃ
আমাদের বিশেষজ্ঞ টিম ফাউন্ডেশন ডিজাইন চেক করে পুনরায় ডিজাইন করে ফাউন্ডেশন খরচ ২০-৪০% কমাতে পারে। যদি ৩০% খরচ কমে। তাহলে খরচ কমবে = ৩৬,০০০×২০০×৩০/১০০ = ২১,৬০,০০০ টাকা
২। রডঃ
রড যদি আগে থেকে প্লান করে হিসাব করে চিন্তাভাবনা করে কাটা হয়, তাহলে রডের অপচয় রোধ করা সম্ভব ১০%। উল্লেখিত ভবনে যদি ১৮০ টন (=৫×৩৬,০০০/১০০০) টন রড লাগে, তাহলে খরচ বাচবে = ১৮০×৮০,০০০×১০/১০০ = ১৪,৪০,০০০ টাকা।
রড কেনার সময় আমাদের কর্পোরেট একাউন্টের মাধ্যমে কিনলে প্রতি টনে ২০০০ টাকা কম দামে পাওয়া যায়। এতে খরচ কমবে = ১৮০×২,০০০ = ৩,৬০,০০০ টাকা
৩। বালিঃ
বালি সাপ্লাইয়াররা মাপে কম দেয়ার বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে থাকে। আমরা সঠিকভাবে বালি মেপে বুঝে নেয়ার কারনে ১০% অপচয় রোধ করা সম্ভব।
এতে খরচ কমবে,
মোটা দানা বালির ক্ষেত্রে, ০.৫৫×৩৬,০০০×৬০×১০/১০০ = ১,১৮,০০০ টাকা
চিকন দানা বালির ক্ষেত্রে, ০.৫০×৩৬,০০০×৩০×১০/১০০ = ৫৪,০০০ টাকা
প্লাস্টার এবং গাঁথুনিতে সাধারণত প্রয়োজনের তুলনায় ৩০% বেশী বালি লাগানো হয় যা অপচয় এবং ভবনের জন্য ভাল নয়। এই কাজটা ঠিকমত করাতে পারলে খরচ কমবে = ০.৫০×৩৬,০০০×৩০×৩০/১০০ = ১,৬২,০০০ টাকা
সব মিলিয়ে খরচ কমবে = ২১.৬০ + ১৪.৪০ + ৩.৬০ + ১.১৮ + ০.৫৪ + ১.৬২ = ৪২.৯৪ = ৪৩ লক্ষ প্রায়, যা সর্বমোট খরচের ৫% প্রায়।
ফাউন্ডেশন = ২০০ টাকা/বর্গফুট
ইট = ৮ টা/বর্গফুট
রড = ৫ কেজি/বর্গফুট
সিমেন্ট = ০.৩৫ ব্যাগ/বর্গফুট
বালিঃ
মোটা দানা = ০.৫৫ সিএফটি/বর্গফুট
চিকন দানা= ০.৫০ সিএফটি/বর্গফুট
পাথর = ০.৯০ সিএফটি/বর্গফুট
লেবার কন্ট্রাকটর = ৩০০ টাকা/বর্গফুট